Tuesday 23 November 2021

স্বামীজী অনুধ্যান ... ২


স্বামীজী অনুধ্যান ... ২


স্বামীজী ছিলেন পৌরুষের প্রতীক | জীবনসায়াহ্নে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন তিনি যে তাঁর সকল বাণীর নির্যাস হল মানুৃষের এই পৌরুষজাগরণ | 'পৌরুষ' -- এই একটি শব্দের মধ্যে তাঁর সমস্ত মন্তব্য মূর্ত, সর্বসন্দেশ সংক্ষিপ্ত, সর্ববাণী বিধৃত | এই পৌরুষ কোনও লিঙ্গশ্রেষ্ঠতার ঘোষণা ছিল না, তা ছিল মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তির উদ্বোধন, তাঁর দেবত্বের উন্মেষ, তাঁর অধ্যাত্মচেতনার প্রকাশ |


সে যুগ ছিল মুমূর্ষু ভারতের আপাতঅন্তিমকাল | সহস্রাধিক বর্ষের পরাধীনতার গ্লানি বয়ে হিন্দু তখন ক্লীবতাপ্রাপ্ত, মরণোন্মুখ | দক্ষিণেশ্বরে শুরু হল মৃতপ্রায় জাতিকে জাগানোর প্রারম্ভিক প্রয়াস | পরমহংসের অমৃতস্পর্শে প্রাণ পেল জাতির শ্রেষ্ঠ মনীষির দল, যুবকুলের অস্ফুট সম্ভাবনা প্রস্ফুটিত হল সহস্রদল পদ্মের প্রকাশে কিন্তু সর্বসাধারণ রয়ে গেল অতল অন্ধকারে, তমসার গভীর অমানিশায় | কে জাগাবে তাঁদের ?


ঠাকুরের দেহ চলে গেল ১৬ অগস্ট, ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দে | নরেন্দ্রনাথ তখন নির্বিকল্প সমাধিবান স্থীতপ্রজ্ঞ ঋষি | তাঁরই ওপর ভার দিয়ে গেলেন যুগাবতার জগত উদ্ধারের কিন্তু পথ বাতলালেন না | এই দুরূহ কর্মভার মাথায় নিয়ে যুগঋষি কাজে নামলেন লোকশিক্ষার্থে | এই কর্ম সম্পাদনান্তে নরেন্দ্রনাথ হলেন বিবেকানন্দ, ব্রহ্মজিজ্ঞাসু যুবা হলেন সমর্থ ব্রহ্মজ্ঞ যুগাচার্য |


রচয়িতা : সুগত বসু (Sugata Bose)

No comments:

Post a Comment