Wednesday 5 February 2020

নেতাজী 'গবেষকের' ব্যবসায়িক বিড়ম্বনা



নেতাজী 'গবেষকের' ব্যবসায়িক বিড়ম্বনা
------------------------------------------------------

হয়ত বা মহাশয় আমার এই রচনাটির ভাবটি সঠিক অনুধাবন করতে পারেন নি | কোথাও তো বলিনি যে ভগবনজীর কাহিনীটি কল্পিত বা বানানো | বরং ভগবনজীর ভাবমূর্তিকে কিভাবে খাটো করা হয়েছে PTSD ও কল্পিত বিবাহের আরোপের দ্বারা, সেই কথাই এই রচনায় বিশেষভাবে উল্লেখিত হয়েছে |

বানিজ্যিক স্বার্থই মুখ্য হয়ে পড়ছে এবং নৈতিক মূল্যবোধ প্রায় অবলুপ্ত যখন দেখি এঁরা কিভাবে ভগবনজীর শ্রীমুখনিসৃত বাণীকে অবলীলায় উপেক্ষা করে নেতাজীর 'বিবাহকাহিনী'কে যাথার্থ দিচ্ছে | ভগবনজী দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই ঘৃনীত চক্রান্তকে নামঞ্জুর করেছিলেন | তবুএ এই দলটি একদিকে ভগবনজীকে নেতাজীর সন্ন্যাসরূপ বলে মানছেন আবার অপরদিকে তাঁরই নিজ প্রাকজীবন সম্বন্ধীয় উক্ত বাক্য মানছেন না | শ্রদ্ধাভাজন এই সন্ন্যাসীপ্রবরের বাক্য এই প্রকার সুবিধামত গ্রহণ-বর্জন তাঁদের ভগবনজী ও নেতাজীর প্রতি আনুগত্য ও ভক্তির পরিচায়ক নয় | এর থেকে বোঝা যায় যে ব্যবহারিক ভাবনাচিন্তা দুষিত করেছে সেই সকল মনকে যা হয়ত একদিন সত্য উদ্ঘাটনে ব্যাপৃত ছিল, যদিও বর্তমান ভাবগতিক দেখে তাও জোড়ের সাথে বলা যায় না |

নির্দিষ্ট লোকেদের খুশী রেখে বানিজ্য করা লাভের সাধনা হতে পারে কিন্তু তা সত্যের সাধনা নয় | নেতাজীর বিবাহ ও কন্যার কাহিনী মেনে নেওয়া, ভগবনজীর ১৯৮৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরে মৃত্যুর কাহিনী মেনে নেওয়া, উভয়ই কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই, আমাদের ভাবতে বাধ্য করে যে এর পেছনে কোনো বনিজ্যিক স্বার্থ লুকিয়ে আছে কিনা এবং বিবাহ-কন্যার প্রকাশ্য বিরোধিতা করার ফলস্বরূপ মামলা মোকদ্দমায় ফেঁসে যাওয়ার যে সম্ভাবনা, তা এড়াবার স্বাভাবিক প্রয়াস কিনা | কিন্তু মিথ্যার সাথে এই প্রকার সমঝোতা এহেন তথাকথিত গবেষকদের নিম্নবর্ণে রঞ্জিত করে যার প্রতিফলন সকল গবেষকদের ওপর বর্তায় |

তবে সরচেয়ে গর্হিত অপরাধ হল ভগবনজীকে PTSDর রোগী নির্ণিত করা | তিনি নাকি এই স্নায়বিক ব্যাধির স্বীকার হয়ে অবাস্তব সব আন্তর্জাতিক কীর্তিকলাপের কথা বলেছিলেন যার বাস্তব রূপায়ণ অসম্ভব | আমার মনে হয় তার থেকে ভাল হত যদি তাঁরা ভগবানজীকে তাঁদের বিশ্বাসের পরিধির বাইরে গণ্য করতেন | কিন্তু কিছু গ্রহণ, কিছু বর্জন, এই আংশিক আনুগত্য, সত্যানুসন্ধানে এই খণ্ডিত অভিযান, এ বড়ই পীড়াদায়ক | এছাড়া, নিজ কল্পনানুযায়ী PTSD চাপিয়ে দিলেন তাঁরা ভগবনজীর ওপর কিসের ভিত্তিতে ? সেই তত্ত্ব যা কিনা সম্পূর্ণ স্বীয় কল্পনাপ্রসূত ও আনুমানিক, তা আবার চালিয়ে দেওয়া হল চলচ্চিত্রে যা কিনা মুখার্জী কমিশন তদন্তের রিপোর্টের ওপর ভিত্তিশীল বলে দাবী করা হয়েছে | চমৎকার ! এই না হলে চালাকি ? কিন্তু স্বামীজী বলেছেন যে চালাকির দ্বারা মহৎ কাজ হয় না | এখানেও হয় নি, হবেও না |

ভগবনজী ও নেতাজীর প্রতি এই অবমাননা শ্রদ্ধেয় শ্রী বিজয় নাগ মহাশয় (Bijoy Nag), ডঃ জয়ন্ত চৌধুরী (Drjayanta Choudhuri), শ্রী কেশব ভট্টাচার্য (Keshab Bhattacherjee) ও ডঃ মধুসূদন পাল (Madhusudan Pal) প্রমুখ বিশিষ্ট নেতাজী অনুগামী, গবেষক ও লেখকদের যার পর নাই হতভম্ব, পীড়িত ও রুষ্ট করেছে | এছাড়া অগণিত সাধারণ নেতাজীপ্রেমীদের মনে এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার উদ্রেক করেছে | এহেন গর্হিত কাজে যাঁরা শরিক হলেন, ধিক, শতধিক তাঁদের !

নেতাজী জিন্দাবাদ ! আজাদ হিন্দ জিন্দাবাদ !

রচয়িতা : সুগত বসু (Sugata Bose)

No comments:

Post a Comment