Friday 26 October 2018

ইচ্ছাময়ীর ইচ্ছা যেমন


ইচ্ছাময়ীর ইচ্ছা যেমন
..................................

অভ্রান্ত উপায় অবলম্বন করে ভ্রান্ত ফললাভ হল আবার
ভ্রান্তিতে প্রাপ্তি, ঈপ্সিত ফল | কর্মের কঠোর শৃঙ্খলা উল্লঙ্ঘন হল, এ এক আশ্চর্য ব্যাপার | ঠাকুর বলতেন, " মায়ার কার্যে অনেক গোলমাল আছে |" তাই বুঝি এমন হয় ? কর্মশৃঙ্খলে বাঁধা যেমন সব, তেমনি তাঁর ইচ্ছায় মুহূর্তে মুক্ত হতে পারে যে কোনো জীব, বস্তু, যা কিছু | অর্থাৎ, এই কার্যকারণরূপ বিশ্ববিধান শুধু তাঁরই ইচ্ছাদ্বারা নিয়ামিত, পরিচালিত | এ এক প্রহেলিকা দুর্বোধ্য, ঈশ্বরেচ্ছা ও প্রাকৃতনিয়মের সহাবস্থান |

ঘটনাপরম্পরার মাঝে বুঝি ফাঁক আছে যেমন দুটি লৌহশৃঙ্খলের মাঝে পারমাণবিক স্তরে থেকে থাকে | এই কি মহানিষ্ক্রমণের পথ ? অর্থাৎ, বৃহতের স্তরে নিয়ম দূর্লঙ্ঘ আর পারমাণবিক স্তরে শৃঙ্খলা শিথিল | যদি অগ্রসর হওয়া যায় এপথ ধরে, তবে শিথিল হতে শিথিলতর ভূমিতে পৌঁছানো সম্ভব কিন্তু তবু নিস্তার নেই | শৈথিল্যেরও এক বন্ধন আছে যা অচ্ছেদ্য ও ঐশী কৃপায় একমাত্র ভঙ্গ হয় | তাই মুক্তি কর্মদ্বারা সম্ভব নয় | যে সত্তা বিচারশীল ও ত্যাগব্রতে নিরত, কি উপায়ে সেই সত্তার বিলুপ্তি সম্ভব ? এ যে অনন্তশৃঙ্খলযুক্ত সত্তার প্রবহমান স্রোত যার হাত হতে নিষ্কৃতি অসম্ভব ! তাই ঠাকুরের এই কথা অতি তাৎপর্য্যপূর্ণ, " মায়ার কার্যে অনেক গোলমাল আছে |"

এখন উপায় ? উপায় শাস্ত্রনির্ধারিত পথপরিক্রমণ, শরণাগত হয়ে পৌরুষাবলম্বন | কর্মসম্পাদনে ফল অবশ্যম্ভাবি কিন্তু নিজ অভিপ্রেত ফললাভ নাও হতে পারে | সবই জগৎকারণের দুর্বোধ্য কর্মশৃঙ্খলের বিরাট ফলনির্ণায়ক প্রকল্পাধীন ও পরিশেষে মহতের ইচ্ছাধীন | এ অবস্থায় শাস্ত্রবাক্যই দিশারী ও ঈশ্বরকৃপা প্রতি পদক্ষেপে ফলদাতা | কর্মপ্রহেলিকা দুর্বোধ্যই রয়ে যায় | মুক্ত হয় মানব তবু ঈশ্বরের বিচিত্র ইচ্ছার আদি, অন্ত, মধ্য কিছুই বুঝে উঠতে পারেনা | মহামায়া বোধের ঊর্দ্ধে রয়ে যান |

ইংরেজিতে বলি এবার | Inviolable is the law of karma, yet, inscrutable are the ways of the Lord. And the cohabitation of the twain is the mystery that will never be solved.

রচয়িতা : সুগত বোস (Sugata Bose)

No comments:

Post a Comment