Monday, 28 July 2025

উত্তিষ্ঠত ! জাগ্রত ! ... ১৬ (নৈশ সংস্করণ, ২৮ জুলাই, ২০২৫)



উত্তিষ্ঠত ! জাগ্রত ! ... ১৬

(নৈশ সংস্করণ, ২৮ জুলাই, ২০২৫)

♧♧♧♧♧♧♧♧♧♧♧♧♧♧♧♧


সম্পাদকীয়

♧♧♧♧♧♧


এই বিরাট ব্রহ্মাণ্ড ছেড়ে কী ক্ষুদ্রে পড়ে আছে মানুষ ! কী তুচ্ছ চেতনা ! সামান্য কটা দিন জীবনধারণের জন্য কী অসভ্য পরস্পর সংঘাত ! কোথায় সহযোগিতা করবে, তা না সমানে সংঘর্ষ, সংঘাত ! এ তো মনুষ্যত্ব নয়, এ তো পশুত্ব | তাই এত বর্বরতা, এত নিষ্ঠুর বলপ্রয়োগ, বাক্যবাণ, যুক্তির শাণিত শরক্ষেপন | সভ্যতা কই ? শিক্ষা ?---সে তো বর্বরতার বিকাশ, সভ্যতার মুখোশ পরে বর্বরতার সাধন | তাই তো 'আগন্তুকে' শেষ প্রশ্ন তুলে গেলেন সত্যজিত | কিন্তু সত্যের জিত হল কই ? আপাততঃ কয়েক সহস্র বছর এই বর্বরতাই ঘটনাক্রমে চলবে, এমনই বলেছেন স্বামী বিবেকানন্দ | বন থেকে সদ্য বেড়িয়েছি কিনা আমরা, তাই বনের বেদান্তকে স্বামীজী সহরে, নগরে, গ্রামে আনলে কি হবে ?, আমরা বনের মানুষ মনের সুখে বন্যই রব | বেদান্ত ? সেটা আবার কি ? তাতে ভোগের কি কোন সামগ্রী আছে ? নেই ? তাহলে তো বেকার, ব্যর্থ বই---ওতে কাজ নেই | আমরা খাব, দাব, ঝগড়া করব, মারব, কাটব, ধ্বংস করব, ঠিক যেমন লক্ষ লক্ষ বছর করেছি বনে---পশুশিকার | এখানে পশু কই ? সংখ্যায় কমে গেছে | তাই, চল, মানুষ শিকার করি, কি বল ? এই তো সভ্য মানুষের ইতিহাস | তাই নিয়ে আবার গর্ব ! 


উপনিষদে যা আছে, তার চেয়ে নেই ঢের বেশি | লেখা হয়েছে আর কতটুকু ? তাও ১০ শতাংশ হয়ত বা রক্ষা পেয়েছে কালপ্রবাহে কি তারও ঢের কম | আর লিখবেই বা কেমন করে ? লেখা তো সব ভাষার মোটা দানায় | কিন্তু ভাব যে বড় সূক্ষ্ম, ধরা দেয় না ভাষায় | তাই বেদবেদান্ত চিদাকাশে ভাসমান, চিত্তাকাশের আকর্ষণে কদাচিৎ কৃপাপরবশ অবতরণ করেন | তখনই ঋষি আলোকপ্রাপ্তির অনুপ্রেরণায় লোককল্যাণে মন্ত্রোচ্চারণ করেন | স্বীয় শিষ্যকুল স্মৃতির দেরাজে সংরক্ষণ করেন তা ভাবীকালের জন্য | পরে, বহু পরে তা কিছু কিছু হয়েছে লিপিবদ্ধ হয়েছে তালপাতায়, আরও বহু পরে পুস্তকাকারে | কিন্তু বর্ণ এক, অর্থ আর এক যা উদ্ধার সম্ভব ভাবে, সমাধিতে | সেই সাধনা কই ? বাণিজ্যে কি সে বর্ণ তার স্বরূপ উন্মোচন করে ? করে না | বৈশ্যগুণের অতীত এ বিদ্যা, যথার্থ ব্রাহ্মনত্ব বিকাশে সত্ত্বগুণের স্ফূরণ তথা প্রতিভায় প্রকাশিত হয় এ ঋতসম্ভার | তাই ঋতদ্রষ্টা, মন্ত্রদ্রষ্টা, সত্যদ্রষ্টা ঋষি | 


ঋষির দর্শনরাশি বেদ, যে বেদ অমৃতসাগরে নিমজ্জিত, তপস্যার বলে চৈতন্যসাগর হতে যে অক্ষরব্রহ্ম উদ্ধার সম্ভব বিদ্যাবর্ণমালারূপে, মায়ের লোলজিহ্বার বাহান্ন বর্ণ | এই ঋষিত্বপ্রাপ্তিই শিক্ষা তথা সংস্কৃতির লক্ষ্য | জীবন এরই পূর্ণাভিযান | তাই সমস্ত জীবনই যোগ, শ্রীঅরবিন্দের অভিব্যক্তিতে | স্বামীজী ভারতবাসীকে এই ঋষিত্বে উত্তীর্ণ হতে আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের বিবর্তনের যথার্থ অগ্রগতিহেতু, তার সনাতন সংস্কৃতির পূর্ণাহুতিহেতু | 🕉 


বিস্মৃত বিবেকবাণীর বিচ্ছুরণে রত,

সত্যরূপ বিকাররহিত বর্ষণে নিরত,

রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দকৃপা লব্ধ সতত

চরণকমলে দাস প্রণত সুগত (Sugata Bose) |

No comments:

Post a Comment