Thursday, 17 July 2025

উত্তিষ্ঠত! জাগ্রত! ... ৪ (প্রাতঃপ্রকাশ, ১৮ জুলাই, ২০২৫)

 






উত্তিষ্ঠত! জাগ্রত! ... ৪

(প্রাতঃপ্রকাশ, ১৮ জুলাই, ২০২৫)

♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡


সম্পাদকীয় 

♡♡♡♡♡♡♡


বাঙালীর এক বিরাট অংশ স্বামীজীকে ভুলে গেছে | ভোগে ভরপুর, নাস্তিকতায় নিমজ্জিত, চাপল্যে চতুর্মুখ, যোগভ্রষ্ট বাঙালী---এঁদের স্বামীজীকে কি প্রয়োজন ? মার্ক্সের বুলি তো আছে, নচেৎ গোরার নকলে গোড়ায় গলদ ? বিপ্লব, গণসংস্কৃতি, নাচ, গান, কবিতা, নাটক, সিনেমা, সিরিয়াল, সেলফি, ফ্যাশন, ফচকিমি, চুটকি, চাতুর্যের রকমারি ভাণ্ডার, আরও কত কি ? এত আছে, আবার বিবেকানন্দ ? ওই হিন্দু প্রতিক্রিয়াশীল, খানিক প্রগতিশীল অদ্ভুত ধরণের এক মিশ্রমানব যাঁর মধ্যে প্রচুর রক্ষণশীল প্রগতিবিরোধী দিক আছে, যিনি এক প্রকার বিদ্যাসাগরের ন্যায় সেকিউলার মানুষের প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা ও কর্মের ওপর সলিলার্পণ করেছেন এবং রামমোহনের কুসংস্কারবিরোধী প্রগতিশীল ভাবান্দোলনের বিরোধীতা করে বাংলা তথা ভারতকে সেই ধর্মীয় অচলায়তন রক্ষণের দিকে নিয়ে গেছেন ? তিনি তো সমাজে এক প্রকার বর্ণাশ্রমেরও প্রতিষ্ঠা চেয়েছেন, এ তো তাঁর বাণী ও রচনাতেই রয়েছে, তাই না ? শ্রেণী সংগ্রামের পথে তো বিবেকানন্দ বাধা | সমাজতান্ত্রিক গণ অভ্যূত্থানের পথে তাঁর ধর্মীয় রক্ষণশীলতার বাণী তো প্রতিক্রিয়াশীল | বিবেকানন্দের যুগ শেষ, এখন মার্ক্স-এঙ্গেল্স-লেনিন-স্টালিন-মাওএর যুগ, Warsaw Pactএর পতন সত্ত্বেও | 


বাঙালীর বিগত প্রায় শতবর্ষের এই ক্রমবর্ধমান বামপন্থী মনোভাব বিবেকানন্দকে করেছে ব্রাত্য | ফলে বাঙালী ক্রমশঃ হয়ে পড়েছে ক্ষীণজীবি, দুর্বল, ক্লীবতাপূর্ণ এক আত্মবিস্মৃত, আত্মঘাতী জাতি | অথচ, স্বামীজী নিজেই ছিলেন শ্রমজীবি মানুষের বন্ধু | আসলে, ইন্দ্রিয়পরবশ বামপন্থী বাঙালীর সমস্যা ওই ধর্মে, আস্তিক্যবুদ্ধিতে যা ভারতের সনাতন ঐতিহ্য ও নিরন্তর সাংস্কৃতিক ধারা | স্বামীজী আমেরিকা থেকে আলমবাজার মঠের গুরুভাইদের পত্রযোগে যথার্থই লিখেছিলেন, "দেখি, বাঙালীর ধর্ম কদ্দূর যায় |" কতদূর গেল, আপনার মতে ?


স্বামীবিস্মরণে মর্মাহত,

তৎসেবায় নিয়োজিত,

তজ্জীবন ও বাণী প্রচারকার্যে সহযোগীতাপ্রার্থী,

চরণকমলে নতপ্রণত,

সুগত বসু (Sugata Bose)


পুনশ্চ: আজ বাঙালীর এই বৌদ্ধিক, নৈতিক, চারিত্রিক, আধ্যাত্মিক, সাংস্কৃতিক তথা সার্বিক অধঃপতনের কালে স্বামীজীর জীবন ও বাণী ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া একান্ত আবশ্যক বলে বোধ করি | সেই প্রেরণায় প্রেরণ করছি তাঁর স্মরণমননের বস্তুবিষয় যাতে বাঙালী তার হৃতচৈতন্য ফিরে পায় ও বিবেকানন্দপ্রদর্শিত উন্নত সরল মার্গে অগ্রসর হয়ে জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে | বিবর্তনের সেই সর্বোচ্চ শিখর ব্রহ্মজ্ঞান যার বিকাশে লোককল্যাণও সবচেয়ে সুন্দরভাবে সম্ভব | সেই উদ্দেশ্যে এই ধর্মরথচক্রঘূর্ণনের প্রয়াস আমাদের | সহযোগিতা করে সাফল্যমণ্ডিত করুন | 🕉

No comments:

Post a Comment