আলমবাজার মঠ অধিগ্রহণ হল | এখনও তুলসী মহারাজের প্রতি অবিচার কেন ? এতে কোন কল্যাণ সাধিত হচ্ছে ?
আলমবাজার মঠ অধিগ্রহণ হল | এখনও তুলসী মহারাজের প্রতি অবিচার কেন ? এতে কোন কল্যাণ সাধিত হচ্ছে ?
-------------------------------------------------------
সত্যরক্ষা না করলে সত্ত্বগুণী হবেন কি করে? তাই অবিলম্বে স্বামী নির্মলানন্দকে (তুলসী মহারাজকে) ঠাকুরের সাক্ষাৎ শিষ্যরূপে স্বীকৃতি দিন | কারণ আপনারা বেশ জানেন সেটাই সত্য |
ঠাকুরের অন্যতম একনিষ্ঠ সেবক, বিবেকানন্দ, ব্রহ্মানন্দ, প্রেমানন্দ প্রমুখ গুরুভ্রাতাপ্রিয় নির্মলানন্দজীকে তাঁর হৃত সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়া হোক, তাঁর প্রভু শ্রীরামকৃষ্ণের সাথে গুরুশিষ্যরূপ পবিত্র সম্পর্ক উদার বিশ্বসমক্ষে উন্মোচিত করা হোক কারণ তা দীর্ঘ অবহেলার ফলে আজ জনমানস হতে বিস্মৃত, বিলুপ্তপ্রায় |
আলমবাজার মঠ অধিগ্রহণ করা হল, যে মঠের শতাব্দিপ্রাচীন প্রতিটি স্তম্ভ, প্রতিটি ইষ্টকখণ্ডও জানে নির্মলানন্দের সাথে ঠাকুরের সম্বন্ধ কি | ওই মঠেই তুলসীচরণ তাঁর অমানুষিক কায়িক, মানসিক, বৌদ্ধিক ও আধ্যাত্মিক সেবা দ্বারা শ্রীগুরু ও তাঁর সন্তানদের এমন সন্তোষপ্রদান করেছিলেন যে স্বামীজী সকলকে সন্ন্যাসধর্ম তুলসীকে দেখে শিখতে বলেছিলেন | পরে সংঘ্যাধ্যক্ষ স্বামী ব্রহ্মানন্দ তাঁকে তাঁর প্রতিভূ হয়ে দক্ষিণ ভারতে প্রচারকার্যে প্রেরণ করেন আদালতস্বীকৃত Power of Attorney দিয়ে যাতে স্বামী নির্মলানন্দকে chela and disciple of Thakur Paramhansa Ramakrishna বলে অভিহিত করা হয় | সেই নির্মলানন্দ স্বামী, যিনি কিনা বিজ্ঞানানন্দজীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন ও তাঁকে আলমবাজার মঠে ত্যাগীরূপে যোগদান করতে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছিলেন, তাঁকেই সরিয়ে দেওয়া হল তাঁর ইতিহাসসিদ্ধ রামকৃষ্ণপার্ষদরূপ অবস্থান থেকে ? এর থেকে মর্মান্তিক ঘটনা আর কি ঘটতে পারে ?
'বিবেকানন্দ মিশন' গঠন, তুলসী মহারাজের সাথে ব্যাঙ্গালোর মঠের চালনা নিয়ে বেলুড় মঠের young brigadeএর বিবাদ, পরে সেই সূত্রে আদালতে মামলা দায়ের, এ সবের পরেও কিন্তু ১৯৬২-৬৩ পর্যন্ত পূজনীয় তুলসী মহারাজ রামক়ষ্ণপার্ষদরূপে বেলুড় মঠ কর্তৃক স্বীকৃত ছিলেন |
তারপর কি হল তা অস্পষ্ট, অপরিষ্কার | তাঁর নাম, ছবি, স্মৃতি ক্রমশ মুছে ফেলা হল | ভবিষ্যতের ভক্ত জানলও না কে ছিলেন এই ঠাকুরের ধন তুলসীচরণ, কে এই স্বামীজীর পত্রে চিহ্নিত তুলসী যিনি স্বামীজীর মতে ঠাকুরের সন্ন্যাসী সন্তানদেরও ত্যাগ-বৈরাগ্য-কর্ম-সেবার নিদর্শনস্থল ছিলেন | হারিয়ে গেলেন ঠাকুরের সন্তান যাঁর ঈশ্বরের সাথে যোগসূত্ররূপ ঘটক হতে চেয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে | স্বামীজীর আদরের তুলসী স্মৃতির অতলান্তে তলিয়ে গেলেন | শুধু তুলসী মহারাজের রোপিত রামকৃষ্ণবৃক্ষ কেরালায় তাঁর অমৃতফল ধরে রাখল নিজশাখায়, আর ধরে রাখলেন বুকে আগলে তাঁর স্মৃতি, কীর্তিগাথা ও তাঁর সম্মান, সত্য ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার সঙ্কল্প-প্রকল্প নিয়ে এই মহানগরী কলকাতার কিছু ভক্তশিষ্য যাঁদের অন্যতম বাগবাজারনিবাসী নির্মলানন্দশিষ্য ব্রহ্মগোপাল দত্ত | তাঁর ও তাঁর সহকর্মীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় রচিত হল অমর গ্রন্থ 'Swami Nirmalananda---Tulsi Maharaj---A Direct Disciple of Sri Ramakrishna---A Focus on Facts and Facets' যা পাঠ করলেই তুলসী মহারাজ যে শ্রীশ্রীঠাকুরের সাক্ষাৎ সন্ন্যাসী পার্ষদ ছিলেন তা স্বচ্ছ সলিলের ন্যায় পরিষ্কার হয়ে যাবে | ভক্তেরা, এই পুস্তক পাঠ করুন | কর্তৃপক্ষ, এই বইটি পুনর্বার পড়ে দেখুন | তারপর পুনর্বিবেচনা করুন শ্রীরামকৃষ্ণপ্রদর্শিত সত্যপথে থাকতে গেলে কি করণীয় |
দিন আগত তুলসী মহারাজের পূর্ণ মর্যাদায় পুনঃপ্রতিষ্ঠার কারণ স্বয়ং ঠাকুরেরই পুনরাবির্ভাবের সময় আগত | এতে সত্য রক্ষা হবে, মিথ্যার নাশ হবে, সকলের কল্যাণ হবে |
ঠাকুর, তুমি চালিত করো আমাদের সত্যপথে, দৃঢ়চিত্তে, কৃতসঙ্কল্প হয়ে, অকুতোভয়ে, অমিতবিক্রমে | 'সত্যমেব জয়তে নানৃতাম সত্যেন পন্থা বিততো দেবযান |'
রচয়িতা : সুগত বসু (Sugata Bose)
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=pfbid0eGW5CttqWs9bLTjUpUFnx1qJvQBpGV6spaMCZ1cKcLK66Dpj3YnkVzsuH5pE2C1l&id=100002901927700&mibextid=Nif5oz
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=pfbid0bw6PmE1jDYJ5GiwW2dywQS1Q9S9jj2wSsK4z9h5wnzoyNXqS8oUkTzLuwAnnJsB1l&id=100002901927700&mibextid=Nif5oz
No comments:
Post a Comment