Sunday 21 August 2022

ঋণ শোধ করা চাই


ঋণ শোধ করা চাই 

-------------------


পিতৃঋণ, মাতৃঋণ, ঋষিঋণ, পত্নীঋণ, সর্বঋণ পরিশোধ না হলে মুক্তির উপায় নেই | নির্বাসনায় ঋণমুক্তি কিন্তু ঋণ থাকতে নির্বাসনা অসম্ভব | তাই গীতায় নিষ্কাম কর্মযোগ অনুষ্ঠানের বিধান | কিন্তু ঋণ থাকতে ফলাকাঙ্ক্ষা এসেই পড়ে | সেই হেতু ঠাকুর সেবাযোগের বিধান দিয়ে গেলেন এ যুগে | মুক্তির মন্দিরের শেষ সোপানকটি তিনি কৃপাপরবশ হয়ে উত্তীর্ণ করিয়ে নেবেন | এ ছাড়া গতি নেই |


এই মুক্তির রহস্য দুরূহ, অনির্বচনীয় | কেমন করে জীব অবিদ্যায় পতিত হয়, আবার কেমন করেই বা উদ্ধার পায়, তা দুর্বোধ্য | পূর্ন যিনি, তিনি অপূর্ণ বোধ করেন কেন অথবা কিভাবে, তা বলা যায় না এইমাত্র বলা ছাড়া যে তিনি আদপেই অপূর্ণ হননি কখনও | মায়ার প্রবঞ্চনামাত্র এই আপাত সৃষ্টি | তারই মিথ্যা আরোপে বদ্ধতাবোধ ও মুক্তির অভিলাশ | ব্রহ্ম যেমনটি অখণ্ড, পূর্ণচৈতন্য, সপ্রকাশ, তেমনটিই অচ্যূত থাকেন মায়ার মিথ্যারোপ সত্তেও |


এই ব্রহ্মই মানুষের স্বরূপ | তাই ব্রহ্মজ্ঞানলাভের পশ্চাতে মানুষ সর্বঋণ হতে মুক্ত হয় | প্রারব্ধ কর্মমাত্র ভাগবতী তনুকে আশ্রয় করে ক্ষয় হতে থাকে বদ্ধ ও মুমুক্ষু জীবের প্রতি কৃপাবর্শনের মাধ্যমে যা কৃপাপ্রাপ্তের সংস্কাররাশিরূপে পরিণত হয়ে জীবন্মুক্ত পুরুষের দেহে প্রবিষ্ট হয় ও যাকে বহন করে তাঁকে সানন্দে কষ্টভোগ করতে হয় | প্রারব্ধ কর্ম সম্পূর্ণ ক্ষয় হলে বিদেহমুক্তি |


রচয়িতা : সুগত বসু (Sugata Bose)

No comments:

Post a Comment