Thursday 17 October 2024

বাদ্য যখন বেদম বাজে


বাদ্য যখন বেদম বাজে 

☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆

https://www.facebook.com/share/p/YNw8pnNM6s7Jb4Pe/?mibextid=oFDknk


মানুষের বুদ্ধি যে এত একদেশদর্শী তা Facebook না করলে কস্মিনকালেও বুঝতাম না | যাঁরা নিজেদের বিজ্ঞ মনে করে এই একদেশদর্শীতার পরিচয় দেন ও আমার প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোজাসুজি মন্তব্য না করে তীর্যক সমালোচনা পালটা প্রতিবেদনে করেন, তাও বাঁকাপথে ঘুরিয়ে, তাঁদের বৌদ্ধিক উৎকর্ষ সম্বন্ধে মাত্র নয়, চারিত্রিক স্বচ্ছতা সম্বন্ধেও যথেষ্ট প্রশ্ন জাগে মনে | 


সরলভাবে সাধারণে প্রশ্ন করেন মন্তব্যস্থলে | তা খুবই গ্রহণযোগ্য | কিন্তু বক্রপথ অবলম্বন করে তথাকথিত বিজ্ঞজন, বিদ্বজ্জন যখন তা করেন, তাও প্রতিবেদনের পূর্ণ তাৎপর্য না বুঝে, তখন তাঁরা তাঁদের উর্বর মস্তিষ্কের এমন নিদর্শন দিয়ে আমায় হতাশ করেন জাতির ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে | আশা করি তাঁরা ক্ষুদ্রবুদ্ধি, অহঙ্কৃত, আত্মমোহিত স্বল্পগোষ্ঠীভুক্ত যাঁরা জাতির যথাযথ প্রতিনিধিত্ব করেন না | নচেৎ সমূহ বিপদ | 


বোধের এই বিপর্যয়, সংস্কৃতির ক্রমক্ষয়, বুদ্ধির স্বল্পপরিধি, হৃদয়ের সঙ্কীর্ণতা ও চরিত্রের অসারতা যখন এরূপ অবলোকন করি, তখন স্বল্পকাল দুঃখবোধ হয় বইকি | কারণ এঁরা PhD নিজ পাঠক্ষেত্রে, শিক্ষাবিদ যাঁদের হাতে দেশের ভবিষ্যৎ | এই যদি এঁদের বৌদ্ধিক যোগ্যতা হয়, তো আগামী প্রজন্মের কী ভয়ঙ্কর শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক পরিণতি হবে, বর্তমানে হয়ে চলেছে, তা সত্যিই শঙ্কাজনক | গণতন্ত্রের গণশক্তিজাগরণে মূর্খ যদি পণ্ডিত আখ্যা পায় নিছক ডিগ্রির জোরে, তো এমনই হয় | এঁদের কাছে আর কিই বা আশা করা যায় ? তাই এই রাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক অধঃপতন লক্ষ্য করে তার প্রতিকারের নিমিত্ত পুনঃ অনুপ্রাণিত হয়ে কর্মসম্পাদনে যত্নবান হই | 


সমস্যা হল এই যে মানুষের আধার ক্রমশঃ ক্ষুদ্র হচ্ছে | উচ্চভাব গ্রহণের ক্ষমতা, ধারণা ও ধারণশক্তি, ও তার পুনর্বিন্যাসে স্বীয় স্বকীয়তা দ্বারা নব নব শিল্পসংস্কৃতিতে পরিণত করা---এই তো সভ্যতার উত্থানের লক্ষণ | তার বিপরীত যখন ঘটে, তখন প্রমাদ গণি | এখন সেই অবস্থা | সবই খেতাবি পণ্ডিত যাঁদের নিজগুণের, নিজকীর্তির বিজ্ঞাপন নিজেদেরই দিতে হয় নানাভাবে গণমাধ্যমে | তাতেই তৃপ্তি, আত্মতুষ্টির চূড়ান্ত, অহংস্ফীতির পরাকাষ্ঠা | এঁরাই আবার আপন 'বিদ্যাবলে' বলীয়ান হয়ে বিচারে বসেন এই আমার মত অকিঞ্চিৎকর লেখকের প্রতিবেদনের | তখনই হয় বিপত্তি | 


ভূতের রাজার বর পেয়ে সংগীত হয় ওই গুপীবাঘার মত, করিম খাঁ, ভীষ্মদেবের মত নয় | তার ওপর ভর করে ভাতখণ্ডে হলে তো আমার ন্যায় ক্ষুদ্র প্রাণীর খণ্ড হতে হয় | এ তো ভবিতব্য ! এখন খণ্ডায় কে ? এক 'খণ্ডন ভব বন্ধন' ঠাকুরই পারেন বাংলার তথা ভারতের তথা বিশ্বের সংস্কৃতি রক্ষা করতে | সাথে যদি এই অভাগার প্রতি করুণাপরবশ হয়ে এই সব সংগীত বিশারদ PhDদের বদ বাদ্যযন্ত্রের বক্রস্বরপ্রয়োগ হতে রক্ষা করেন, তো বড় কৃপা হয় | 🕉


রচয়িতা : সুগত বসু (Sugata Bose) 


আলোকচিত্র : সুরসম্রাট বাবা আলাউদ্দীন খাঁ ও সুরনন্দিনী মা অন্নপূর্ণা দেবী যাঁরা আজও শাস্ত্রীয় সংগীতের সর্বোচ্চ অনুপ্রেরণারূপে লেখকের হৃদয়মনে নিত্যবিদ্যমান |

No comments:

Post a Comment