Sunday 6 June 2021

সাধনা, সত্ত্বগুণ ও আহার


সাধনা, সত্ত্বগুণ ও আহার

-----------------------------------


Pulak Ghosh সাধনার সময় মৎসমাংসাদি খাদ্য শাস্ত্রসম্মতভাবে বর্জনীয় | তাতে সাধনা সুগম নয়, ইন্দ্রিয়দমন অধিকতর সহজসাধ্য হয় |  কিন্তু সাধারণ জীবনের জন্য এ বিধান নয় | গৃহস্স্থের জীবন মোটের ওপর রজোগুণকেন্দ্রিক | সেখানে আমিষভোজনে অসুবিধা নেই, বরং তা স্বাস্থকর ও জীবনযুদ্ধের জন্য অধিক উপযোগী | খাদ্য প্রায়ই জন্ম ও পারিবারিক ও পারিপার্শিক রীতি ও অভ্যাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত | তাই ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন প্রয়োগ | সাধক স্বতঃপ্রবৃত্ত হন নিরামিষ আহার করতে তাঁর জীবের প্রতি জাগ্রত প্রেম হেতু ও সাধনমার্গ সুগম করার জন্য | এইকালে আমিষাহারের প্রতি তাঁর স্বতঃস্ফূর্ত অনিহা জন্মায় ও তিনি তা পরিহার করেন সাধনকালের প্রারম্ভ হতে বেশ কিছুকাল পর্যন্ত যতক্ষণ তিনি শারীরিক বৈলক্ষণ্য দেখেন খাদ্যাখাদ্যের সামাণ্য তারতম্যহেতু | সাধনমার্গে অগ্রসর হতে হতে মন ধীরে ধীরে সূক্ষতর অবস্থায় উন্নীত হয় যেখানে স্থূলশরীরের আহার আর প্রতিক্রিয়া করতে সমর্থ হয় না | তখন সাধক পূর্বাভ্যাসে প্রায়ই ফিরে যান অবসরমত ও আমিষভক্ষণ করতেও অসম্মত থাকেন না | শেষে পরমহংস অবস্থায় তো আর কোনো খাদ্যাখাদ্যের আক বিধিনিষেধই থাকে না | সত্ত্বগুণে প্রতিষ্ঠিত সাধকের আহার নিরামিষই হোক আর স্বল্পাধিক আমিষই হোক, তা সাধকের স্বাভাবিক মানসিক সংযম দ্বারাই নিয়ামিত হয় | তাঁর স্থিত মন তখন আর বিক্ষিপ্ত হয় না আহারের গুণাগুণের কারণে কারণ সাধকের মনই তখন মনের নিয়ন্ত্রনে সমর্থ, দেহের আহার তাতে আর কোনও ছাপ ফেলতে পারে না |


রচয়িতা : সুগত বসু (Sugata Bose)

No comments:

Post a Comment