Monday, 13 October 2025

EPISTLES TO 'DISCIPLES': DIGANTA SENGUPTA ... 1


EPISTLES TO 'DISCIPLES': 

DIGANTA SENGUPTA ... 1


পত্র ... ১                                     ১৪.১০.২০২৫                                                   

পরম স্নেহাস্পদেষু দিগন্ত,

     জীবনের উদ্দেশ্য ঈশ্বরলাভ, অর্থাৎ, আত্মজ্ঞানলাভ | এই রকমই বলেছেন ঠাকুর | সমস্ত কর্ম তাই চিত্তশুদ্ধির নিমিত্ত সম্পাদন করাই ধর্ম | কর্মের ফল আছেই---শুভ কর্মের শুভ ফল, অশুভ কর্মের অশুভ ফল | এই কর্মবিধান অলঙ্ঘনীয় | একমাত্র অবতারকৃপায় এর হাত থেকে নিমেষে নিস্তার পেতে পারে জীব, নচেৎ নয় | কর্মশৃঙ্খল হতে মুক্তি বাসনা নির্মূল না হলে হবার নয় কারণ বাসনাই কর্ম প্রস্তুত করে | কর্মের এই ধারা জন্ম, জীবন, মৃত্যু, পরে পুনঃপরিক্রমণ এই ধরাধামে | এই রকম চলতেই থাকে যতদিন না বিষয়ভোগে বিতৃষ্ণা জাগে | বিষয়রাগ দূর হলে ভগবদানুরাগ স্বতঃই প্রকাশিত হয়ে পড়ে হৃদয়ের গহন হতে | তখন উলটো পথে গমন শুরু হয় যার নাম বৈরাগ্য |

      আজ এই পর্যন্তই থাক | ভগবানকে কেন্দ্র করে জীবন গড়ে তোলো | ভাল থেকো | ঠাকুর-মা-স্বামীজী কল্যাণ করুন | 

                                                                 ইতি,

                                                           আশীর্বাদক,

                                                             সুগত বসু



পত্র ২ : 


পরম স্নেহাস্পদেষু দিগন্ত,             ১৭.১০.২০২৫

      তোমার আগ্রহ দেখে দ্বিতীয় পত্র লিখছি | জীবনে স্বাস্হ্যই পরম সম্পদ | ইংরেজিতে বলে, health is wealth. স্বাস্থ্যটি ঠিক থাকলে সব ভাল | ওটির ওপর দৃষ্টি রাখবে | জীবন এক লম্বা দৌড়, marathon race. সব শক্তিটুকু শুরুতেই শেষ করে ফেললে চলবে কেন ? শক্তিলাভ করা চাই | শক্তি সংরক্ষণ করা চাই | শক্তির যথোচিত ব্যবহারে তা ব্যয় করা চাই | এই ত' ধর্ম | যৌবনে ব্রহ্মচর্য তাই অপরিহার্য | অখণ্ড ব্রহ্মচর্য পালনে মহাশক্তির উদ্বোধন হয় | পরে সেই শক্তিই জীবনচালনায় সহায়তা করে---কর্মে, ধর্মে, ভোগে, যোগে জীবের রসদরূপে কাজ করে | পবিত্রতার ওপর তাই সনাতন ধর্মের এত জোর দেওয়া | বিবাহপূর্বকাল পর্যন্ত অখণ্ড ব্রহ্মচর্য কর' | স্বামীজীর বই পড় সাথে সাথে | জীবন সার্থক হবে | আমার আশীর্বাদ ত' সবসময় তোমার ওপর বর্ষিত হচ্ছে, হবেও---এ বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকো | 

         জীবন মহা মূল্যবান বস্তু | সময় সীমিত | সদ্ব্যবহার কর' | আজ এই পর্যন্ত | কর্মে সফলতা আসুক | জীবন ধন্য হ'ক | ঠাকুর-মা-স্বামীজী সহায় | তাঁদের শরণে থাকো | সব মঙ্গল হবে | 

                                                                        

                                                                  ইতি,

                                                              সুগত বসু



পত্র ৩ :                                                     


স্নেহের দিগন্ত,                              ২৯/১০/২০২৫

     অনন্ত সম্ভাবনাময় রামধনুরঞ্জিত গগনস্পর্শী প্রসারিত দিগন্ত যে, তার জন্য সামান্য পত্রপ্রেরণ অসম্ভব হলেও হতে পারে, এমন অসম্ভব কথা কেমন করে সম্ভব হল তোমার ওই সুসংস্কৃত বচনে, তাই ভাবছি | বুঝেছি, আমার ভাষণটি ভাল লেগেছে, তাই সঙ্কোচপূর্ণ প্রত্যাশা | এ যেন বৈপরীত্যের সমন্বয় ভাবের গভীরে যেখানে সমরস বিরাজিত বক্ষে | 

     তোমাদেরই ওপর আশা ছিল স্বামীজীর ভারতের ভাগ্য পরিবর্তন করবে বলে, তাঁর বাণীর সার্থক রূপায়ণের দ্বারা | সে যুগে মহাপ্লাবন বয়েছিল স্বামীজীর ব্যক্তিত্ব ও বাণীর প্রভাবে অবিভক্ত বাংলা ও মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে | মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাত ও পাঞ্জাবেও রোল উঠেছিল | সমগ্র ভারত ক্রমে উত্তাল হয়ে ওঠে | বৃটিশের ঘুম ছুটে যায় | 

       দেহ যাবার ছ'মাস আগে হেদুয়া পার্কের ধারে বাল্যবন্ধু ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়কে সজলচক্ষে বলেছিলেন, "ভবানী ভাই, আমি আর বাঁচব না | এখনও অনেক কাজ বাকি |" ঠাকুর ভারত উদ্ধারের যে ভার দিয়ে গিয়েছিলেন প্রিয় শিষ্য নরেনের কাঁধে, তার অসমাপ্ত অধ্যায়ের কথা ভেবে অস্থির হয়েছিলেন সপ্তর্ষিমণ্ডলের এই ঋষিপ্রবর, আমাদের স্বামীজী | 

        দেহ যাবার পাঁচ মাস আগে বললেন, "দৈবদুর্বিপাকে যদি বা দেহ হ'ল কিন্তু কোন' কাজে লাগল না | মাথাওয়ালা ছেলেগুলো সব বে করে বসে আছে, নইলে মানযশখ্যাতির দাস, নয় শরীর অপটু | আর যারা আসছে, তারা উচ্চ উচ্চ ভাবগ্রহণে সমুৎসুক নয় | এই দেখে মন হতাশায় ভেঙে পড়ে | তবে হ্যাঁ, যদি ঠাকুরের ইচ্ছা হয় ত' এদেরই মধ্য থেকে কালে সব মহাবীরের জন্ম হবে |" 

         ৪ঠা জুলাই, ১৯০২ সালে চলে গেলেন স্বামীজী যুগধর্মসংস্থাপনকর্ম অসমাপ্ত রেখে | কার জন্য, দিগন্ত ? কার ওপর ভরসা করে মায়ের কোলের ছেলে শিশুর ক্রন্দন করে রাত ৯:১০ মিনিটে অখণ্ডের ঘরে ফিরে গেলেন ? ভেবেছ কখনও ? ভাবো | আমি এ জীবন দিলাম স্বামীজীকে | তুমিও কি দেবে না ? তাঁর অসমাপ্ত কাজে সেতুবন্ধের কাঠবিড়ালীর ভূমিকা পালন করবে না ? মহাযুগচক্র ঘূর্ণন করে গেছেন ঠাকুর | এর গতি অপ্রতিরোধ্য | এসো, এই রথের দড়ি ধরে আমরাও টানি সনাতন ধর্ম-সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের রক্ষণকল্পে, দানবকে মানবে রূপান্তর, মানবকে দেবতায় আর দেবকে ব্রহ্মর্ষিপদে আসীন করার পূত অভিপ্রায়ে | 🕉 

          ভাল থেকো |  ঠাকুর-মা-স্বামীজীর চরণাশ্রিত থাকো আজীবন | জীবন ধন্য হ'ক !


                                                                                                                                            আশীর্বাদান্তে,

                                                             সুগত বসু



No comments:

Post a Comment