Tuesday 19 September 2023

যুগনায়কের আহ্বানে যুবসমাজ জাগো !


যুগনায়কের আহ্বানে যুবসমাজ জাগো !

------------------------------------------


একদিন বাংলার বিপ্লবীরা স্বামীজীর অনুপ্রেরণায় দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিল | আর আজ বাংলার এক বিরাটসংখ্যক যুবসম্প্রদায় স্বামীজীর বাণী ও রচনার ধার দিয়েও যায় না | ফলে বাংলা নিম্নমার্গের ভোগসর্বস্ব সংস্কৃতিতে নিমজ্জিত হয়েছে, হচ্ছে |


এই ধারার সূত্রপাত আজ নয়, অন্তত একশ' বছর আগে | সুভাষচন্দ্র বসু বাংলার যুবসম্প্রদায়ের এই চারিত্রিক অবক্ষয়ের কথা প্রায় একশ' বছর আগে লিখেছিলেন ও তার সমাধানরূপে রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ সাহিত্য পাঠকে নির্ণীত করেছিলেন |


স্বামীজীর তিরোধানের অব্যবহিতকাল পরে বাংলার বিপ্লবের অগ্নিযুগ শুরু হয় স্বামীজী যার ছিলেন আধ্যাত্মিক প্রাণপুরুষ | অগ্নিযুগের অবসানের পর থেকেই বাংলায় ধীরে ধীরে রুশ বিপ্লবের প্রভাব পড়তে থাকে ও পরিশেষে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির পত্তনের সাথে সাথে ক্রমশঃ জড়বাদী আদর্শের ছায়া পড়তে থাকে যা পূত অধ্যাত্মবোধকে আচ্ছাদিত করে ফেলে অনেকাংশে | বিপ্লবের রেশ তাও বিচ্ছিন্নভাবে থাকে যদিও গান্ধীবাদের প্রভাবে তা স্তিমিত হয়ে যায় | অন্যদিকে আসে রবীন্দ্রপ্রভাব যা প্রচ্ছন্ন ভোগকে কেন্দ্র করে সংস্কৃতির দিকে বাংলার যুবক যুবতীদের অনেককেই আকৃষ্ট করে |


দেশভাগের পর বিশ্বরাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলায় বামপন্থীদের প্রভাব বাড়তেই থাকে | পরবর্তিকালে রামকৃষ্ণ মিশনের সংখ্যালঘুতার দাবিতে আদালতে মামলাকে কেন্দ্র করে আরও জল ঘোলা হয় এবং বামপন্থার প্রকোপে যুবসমাজ বিপথে চালিত হয়ে স্বামীজীর সংস্পর্শ থেকে বঞ্চিত হয় | ধনতন্ত্রের প্রকোপ ও তার প্রতিক্রিয়ারূপে বামপন্থার ফাঁকা বুলি যুবসমপ্রদায়কে বিভ্রান্ত করে যার ফলে চরিত্রভ্রষ্ট রিক্ত হয়ে আজ বাংলার যুবক যুবতী স্বামীজীর থেকে বহু দূর |


স্বামীজী নিজেও বাংলার অনীহার শিকার হয়েছিলেন সারা জীবন | এখন তাঁর বাণী ও ভাব সেই অবহেলার উত্তরাধিকার লাভ করেছে | তাই বাংলার আজ এই দুর্গতি | এখন তো বাংলা অধঃপতনের শেষ সীমায় উপস্থিত, সংস্কৃতির সর্বনিম্ন স্তরের পঙ্কে পতিত | ইন্দ্রিয়পরায়ণতা সংস্কৃতির নামে, দর্শন-বিজ্ঞানের নামে ফাঁকা বুলি, জীবনের সর্বক্ষেত্রে চাপল্য, শঠতা ও বাগাড়ম্বর, চরিত্রহীনতার চূড়ান্ত |


এখন উপায়? উপায় বিবেকানন্দ | কিন্তু কে দেখাবে পথ? চরিত্রবান বলিষ্ঠ মানুষ কোথায় যাঁকে যথার্থ কামিনীকাঞ্চনত্যাগী বলে চিহ্নিত করা যেতে পারে? সবই তো টাকার দাস, রাজনেতনেত্রীর ধামা ধরা | তাহলে কি উপায়ে উদ্ধার হবে বাংলার যুবক যুবতী? ওই যে বললাম---উপায় বিবেকানন্দ | তাঁর বই পড়ো | তিনিই বাতলে দেবেন পথ | তিনি আজও পবিত্রচিত্তে বিদ্যমান সাক্ষাৎ অনুপ্রেরণারূপে, হৃদয়ে মহাশক্তিরুপে অধিষ্ঠিত | তাঁর বাণী ও রচনাতে তিনি আজও মূর্ত, জীবন্ত, অগ্নিরূপে প্রকাশিত | কারুর কাছে যেতে হবে না | পার্থসারথী নিজেই রথের রশি ধরে আছেন | হে বঙ্গযুবা, বিবেকানন্দরথে অধিষ্ঠিত হও ! তারপর আলোকের পথে চলতে থাকো |


রচয়িতা : সুগত বসু (Sugata Bose)

No comments:

Post a Comment