কুঠিবাড়ীর সেই ডাক
--------------------------
ভারতের রাজনৈতিক মুক্তির ভিত্তি স্থাপন করে গেলেন ঠাকুর ভারতের আধ্যাত্মিক মুক্তির উদ্বোধন করে | রামমোহনে যার সূচনা, সুভাষচন্দ্রে তারই পরিসমাপ্তি |
এক বিরাট মুক্তিকামি ঢেউ, যার শীর্ষে অবস্থান করেন অবতার, ভারতভূখণ্ডকে প্লাবিত করে নবজীবনে সঞ্জীবিত করেছে | সেই ভাবরাশি রামকৃষ্ণ-উৎসমুখ হতে বিবেকানন্দ-বাণীরূপে প্রবাহিত ; পরে বাংলার বীর বিপ্লবীকুলের রুধিররঞ্জিত হয়ে সর্বভারত তথা বিরাট বিশ্বে মুক্তির অভীপ্সারূপে প্রকটিত |
রামকৃষ্ণ পরাধীন মানুৃষের পরিত্রাতা | বিবেকানন্দ তাঁর বাণীরূপ | আর অগণিত মুক্তিকামী মানুষ তাঁর ভাবসমুদ্রে অবগাহন করে পার্থিব শৃঙ্খল ভেঙে মুক্ত | বাঘা যতীন, রাসবিহারী, সুভাষচন্দ্র -- এই ত্রয়ী, মাত্র সেই বিরাট মুক্তিযজ্ঞের শ্রেষ্ঠ অর্ঘ প্রদান | বাকী সব হারিয়ে গেছেন নিঃস্বার্থ আত্মনিবেদনে | আজ তাঁরাই পূর্ণাহূতি চান আমাদের কাছে দেশমাতৃকার সম্পূর্ণ স্বাধীনতার পুণ্যযজ্ঞে | তাই বিদ্রোহী কবির আমাদের চৈতন্যলোকে আহ্বান,
" ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান,
আসি অলক্ষে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন বলিদান ?"
আজও ঠাকুর ঐ দক্ষিণেশ্বরের কুঠিবাড়ীর ছাদ হতে কাতরকন্ঠে ডাকেন, " ওরে, তোরা কে কোথায় আছিস ? আয় | আমি যে আর থাকতে পারি না |" সেই ডাকে সাড়া দিয়ে একদিন দলে দলে দেশের যুবক যুবতী চূডান্ত আত্মোৎসর্গ করেছিলেন | আর আমরা কি আজ সে ডাকে সাড়া দেব না ?
রচয়িতা : সুগত বসু (Sugata Bose)
No comments:
Post a Comment